মধুকল্পিতা চৌধুরী দাস :
লোকসভা নির্বাচনের নির্ঘণ্ট প্রকাশ হতেই শাসক-বিরোধী দলের তরজা শুরু। রাজনীতির ময়দানে শাসক-বিরোধী কেউই এক ইঞ্চিও জমি ছাড়তে নারাজ। জিএসটি বা নোট বাতিল তো ছিলই এবারে রমজানে মাসে ভোটকে কেন্দ্র করে শাসক-বিরোধী তরজা একেবারে তুঙ্গে!
মুসলিম সম্প্রদায়ের ভোট কমানোর জন্যই নাকি মোদি সরকারের এই সিদ্ধান্ত, এমনই কটাক্ষ বিরোধী দলগুলির। যদিও বিরোধীদের এই দাবি মানতে গ্রহণ করতে নারাজ শাসক দল থেকে শুরু করে বিশিষ্ট সাংবাদিকরা।
প্রতিবারই লোকসভা নির্বাচন এপ্রিল বা মে মাসে হয়ে থাকে। ২০১৯এও তার অনাথা হয় নি। এক প্রকার সেই নিয়ম মেনেই এবারের নির্বাচনের দিনক্ষণ ঠিক করা হয়েছে। কোনো একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে কেন তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে! শুধুই কি ভোট ব্যাংকের রাজনীতির কথা ভেবেই তাঁদের তুরুপের তাস হিসেবে ব্যবহার করা হবে! এমনই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।
ভারতবর্ষে অনেক সম্প্রদায়ের মানুষের বাস। সারা বছরই তাঁদের কোনো না কোনো উৎসব থাকেই! শুধু মাত্র একটি সম্প্রদায়ের উৎসবকে কেন্দ্র করে কেন রাজনীতি করা হচ্ছে? এমনি প্রশ্ন তুললেন বিশিষ্ট সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত। পাশাপাশি তিনি বলেন, ‘রমজান বলেই যে ভোট পিছাতে হবে, এটা খুবই ঠুনকো যুক্তি। তাহলে প্রতিটা সম্প্রদায়ই তো দাবি করবেন যে তাঁদের উৎসব আছে, ভোট করা যাবে না। ভোট তো নির্দিষ্ট সময়েই হচ্ছে। আর তাছাড়া রমজানে মাসে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষেরা তো সব কাজই করেন! তাঁরা অফিসেও যান, কাজও করেন তাহলে ভোট দিতে তাঁদের অসুবিধার কি আছে!’
অনর্থক আওয়াজ তুলে একটি বিশেষ সম্প্রদায়কে উত্তেজিত করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন রন্তিদেব সেনগুপ্ত।
অপরদিকে বিজেপি নেত্রী প্রিয়াঙ্কা টিব্রেয়াল বলেন, ‘বিরোধীরা সবসময় মাইনোরিটি-মেজরিটি নিয়েই রাজনীতি করতে চান। এটা প্রথমবার নয়, এর আগেও এই সময়ে ভোট হয়েছে। এই বিষয়কে নিয়ে অনর্থক রাজনীতি করা উচিত নয়।’
অপরদিকে অল ইন্ডিয়া মাইনোরিটি সেলের স্টেট সেক্রেটারি মহম্মদ তৌসিফ রহমানের দাবি, ‘রমজান মাসে ভোট পরায় মুসলিম ভাই-বোনেদের প্রচুর অসুবিধায় পড়তে হবে। প্রচার হোক বা ভোট দেওয়া সমস্যার সম্মুখীন হবেন মুসলিম ভাই-বোনেরা।’
শাসক বিরোধী এই তরাজায় শেষ পর্যন্ত কার জয় হয় এখন সেটাই দেখার। বিরোধীদের অভিযোগ উড়িয়ে বিজেপি আবার রাজপাটে বসে কিনা তার জন্য অপেক্ষা করতেই হবে আগামী ২৩শে মে পর্যন্ত।