তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআরের হুমকি দিলেন ব্যারাকপুরের ভূমিপুত্র তথা বিজেপি সাংসদ অর্জুন সিং। মঙ্গলবার হাসপাতাল থেকে ছাড়া পেয়েই সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘‘ব্যারাকপুরের সিপি আমাকে বন্দুকের বাট দিয়ে মেরেছে।’’ এরই পরিপ্রেক্ষিতে এদিন পুলিশমন্ত্রী তথা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে এফআইআর করার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর থেকেই যে তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনেছেন রাজ্য সরকার, এই কথা তিনি বারবারই বলে এসেছেন। এদিন হাসপাতাল থেকে বেরনোর সময় সে কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘‘বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর আমার বিরুদ্ধে ৪৭টা মামলা করা হয়েছে। আমি দেখতে চাই সেঞ্চুরি কবে হয়।’’
এখানেই থেমে থাকেননি ব্যারাকপুরের সাংসদ। এরাজ্যে শিক্ষক থেকে শুরু করে মহিলা কেউই যে সুরক্ষিত নয় সেকাথাও বলেন তিনি। মমতার বিরুদ্ধে সূর চড়িয়ে এদিন তিনি আরও ব‌লেন, কারো ওপর হামলা বা কেস করা এটা ‘ওনার’ পরম্পরা।
প্রসঙ্গত, একটা সময় ছিল দিদির কথার এক চুলও সরতেন না তিনি। বামেদের শক্ত ঘাঁটিতে তড়িৎ তোপদার, রঞ্জিত কুণ্ডুদের সঙ্গে লড়াই করেন অর্জুন সিং। আর তাতেই দিদির অত্যন্ত পছন্দের পাত্র হয়ে ওঠেন তিনি। ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলে তৃণমূলের সবচেয়ে বড়ো ভরসা ছিলেন অর্জুন সিং। তবে, ২০১৯ এর লোকসভা নির্বাচনের আগে পদ্ম শিবিরে যোগ দেওয়ায় সেই অর্জুন সিংই হয়ে ওঠে তৃণমূলের সবচেয়ে বড়ো প্রতিপক্ষ। এমনকি লোকসভা নির্বাচনেও তৃণমূল প্রার্থী দিনেশ ত্রিবেদীকে বিপুল ভোটে পরাজিত করেন তিনি।
ভোটের আগে থেকেই ব্যারাকপুর সহ ভাটপাড়ায় অশান্তি শুরু হয়। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস থেকেও রক্ষা পায় নি ভাটপাড়ার মানুষজন। তবে, রবিবারের এই ঘটনা যে চরম পর্যায় পৌঁছে গিয়েছে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। আহত অর্জুন সিংকে দেখতে হাসপাতালে যান বিজেপি নেতা মুকুল রায়, রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, শমীক ভট্টাচার্য, অনুপম হাজরা, নবীন মিশ্র সহ রাজ্য বিজেপির অন্যান্য নেতৃত্ব।
উল্লেখযোগ্য ভাবে এদিন ব্যারাকপুরের সাংসদের সঙ্গে দেখা করতে যান বিধাননগরের প্রাক্তন মেয়র সব্যসাচী দত্ত। তবে, খাতায় কলমে এখনও তৃণমূলের বিধায়ক থাকলেও অর্জুন সিংয়ের সঙ্গে এই সাক্ষাতে সব্যসাচী দত্তের বিজেপিতে যোগ দেওয়ার প্রসঙ্গ আরও একবার উস্কে গেল তা বলাই বাহুল্য।