নিজস্ব সংবাদদাতা: বামফ্রন্ট থেকে একসময় তৃণমূলে যোগদান করেছিলেন তিনি। হয়েছিলেন প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের চেয়ারম্যান। কিন্তু বিধানসভা ভোটের আগে থেকেই ফের মন বদল হতে শুরু করে রুদ্রনীল ঘোষের। সোজাসুজি গেরুয়া শিবিরে যোগ দেন তিনি। আর এবার মুখ্যমন্ত্রীর দান খয়রাতি নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় করলেন মোক্ষম আক্রমণ। সরাসরি বললেন, ‘জনসাধারণের রক্তজলের টাকা ক্লাবকে দেবেন না’। আশ্চর্যের বিষয় তাকে সমর্থন করেছেন অনেকেই।
মমতা-গড় ভবানীপুর কেন্দ্রে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের কাছে পরাজিত হওয়ার পর সমালোচনা কম হয়নি রুদ্রনীল ঘোষকে নিয়ে। তৃণমূল ফের ক্ষমতায় আসার পর নীরবেই ছিলেন মাস দুয়েক। ফিরেছেন পুরনো নেশা-পেশার কাছে। তবে এবার দীর্ঘদিন বাদে ফেসবুকে লম্বা-চওড়া পোস্ট করলেন।
রুদ্রনীল ঘোষ বলেন, “দয়া করে জনসাধারণের রক্তজল করা ট্যাক্সের টাকা ক্লাবকে দেবেন না”। আসলে সদ্য নেতাজী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে মুখ্যমন্ত্রী ২৫ হাজার ক্লাবকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। তাতেই আপত্তি তুলেছেন রুদ্রনীল। হিসেব কষে দেখিয়ে দিয়েছেন, ২৫,০০০ ক্লাবকে ৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার মানে হিসেব দাঁড়ায়- ২৫০০০×৫,০০০০০= ১২৫ কোটি টাকা। এরপরই মমতাকে উদ্দেশ্য করে সাধারণ নাগরিক হিসেবে অভিনেতার প্রশ্ন, “কার টাকা? আপনার? আপনার দলের? না, আমাদের টাকা। বাংলার সাধারণ মানুষের ট্যাক্সের টাকা! যাদের বাড়ি বানাবার বা উন্নয়নের বা ত্রাণের টাকা এলেও চুরি হয়ে যায় দিনের পর দিন প্রকাশ্যে। আপনার পুলিশ নির্দেশ পায় না সেই চোরদের জেলে ভরার! শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকে বাংলার জনগন। প্রতিবাদ করতে গেলেই মিথ্যে কেসে ফেঁসে যাওয়ার ভয় যে সবার বুকে! তাই চুপ সবাই”।
এখানেই থামেননি রুদ্রনীল। রাজ্যে বেকারত্ব প্রসঙ্গ তুলে লিখেছেন, “দুটো করোনার ধাক্কায়, ঝড়ের দাপটে কাজ হারিয়েছে যে অগণিত মানুষ, ৫-৬ বছর ধরে চাকরির জন্য অন্দোলন বিক্ষোভে রাস্তায় বসে আছে যে লক্ষ লক্ষ শিক্ষিত বেকার যুবক, “…শ্রী” অনুদানে বাঁচার অভ্যাস থেকে স্বসম্মানে স্বনির্ভর হতে চাইছে যে মেয়েগুলো- এই টাকাটা তাদের টাকা। তার ও তার পরিবারের রক্ত জল করা ট্যাক্সের টাকা। এ রাজ্যে ডোমের চাকরির জন্য ৮০০০ আবেদন পত্র পড়েছিল মাত্র কয়েকদিনে। মাইনে ১৫ হাজার, তাও পার্মানেন্ট নয় এই চাকরি। এইট ক্লাস পাশ করা চাকরি পেতে পচা গলা মৃতদেহের সাথে সময় কাটাতে রাজি ছিল মাষ্টার ডিগ্রি বা ইঞ্জিনিয়ার পাশ করা বেকার যুবকরা। এমন কি ৭৪ জন মহিলাও আবেদন করেছিলেন ডোম হতে! খুব সহজ কি এই ঘটনাটা? মানি, কোনও কাজ ছোট নয়। কিন্তু কোন আর্থিক অবস্থায় পড়লে চুরি জোচ্চুরিতে না ঢুকে এই কষ্টদায়ক চাকরির জন্যেও হুড়োহুড়ি পড়ে ম্যাডাম? এই টাকাটা এদের সবার টাকা”।
রুদ্রনীলের এহেন মন্তব্যের পর তৃণমূলের পালটা জবাব কি হয় এখন সেটাই দেখার।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.