নিজস্ব সংবাদদাতা: বিধানসভা থেকে ওয়াকআউট করল রাজ্য বিজেপি। বিধানসভায় তৃণমূল ভাষা সন্ত্রাস করছে, অভিযোগ তুলে মঙ্গলবার অধিবেশন কক্ষ ছেড়ে বেরিয়ে যান শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্য বিধায়করা। শুভেন্দু অধিকারীর অভিযোগ, “আমার বাবার নাম তুলে অপমান করা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী হেরে গিয়েছেন সেটা বলা যাবে না। নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলায় অধ্যক্ষ আপত্তি জানিয়েছেন।” এরপরই স্লোগান দিতে দিতে বিধানসভার বাইরে বেরিয়ে আসেন বিজেপির বিধায়করা। তুমুল হট্টগোল শুরু হয় বিধানসভা চত্বরে।
শুভেন্দু অধিকারী আরও বলেন, “আলোচনা চলাকালীন শাসকদলের এক বিধায়ক নানা টিকা টিপ্পনি দিতে শুরু করেন। আমরা তবু কিছু বলিনি। মাননীয়া মুখ্যমন্ত্রী বলার আগে আমি নিয়ম অনুযায়ী বক্তব্য রাখতে উঠেছিলাম। তার আগে তৃণমূলের নৈহাটির বিধায়ক তিনি সবার মধ্যে আমার বাপ তোলেন। বাবা শব্দটি করেন। আমি অধ্যক্ষকে বলি এটি অসংসদীয় শব্দ, আপনি বাদ দিন। উনি রাজি হননি। যখন বিজেপির বিধায়করা একজোট হয়ে এর প্রতিবাদ করেন, তখন বলেন দেখছেন।”
শুভেন্দুর দাবি, এই ঘটনার পরও তৃণমূলের বিধায়কেরা কক্ষ ছাড়েননি। শুভেন্দুর কথায়, “আমি বলতে শুরু করি। এর আগেও বহুবার বলেছি, এদিনও বলেছি”।
তাঁর কথায়, “এই বিধানসভায় তিনটে উল্লেখযোগ্য দিক রয়েছে। এক, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জনসংঘ আজ যারা বিজেপি এখানে ৭৭টা আসনে জয়ী হয়ে প্রধান বিরোধী শক্তি। দুই, বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি কিংবা কংগ্রেসের একজন প্রতিনিধিও এবার জিতে আসতে পারেননি। এটাও এই বিধানসভার উল্লেখযোগ্য দিক। আরও উল্লেখযোগ্য, একজন মুখ্যমন্ত্রী তিনি বিধানসভা ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে হেরেছেন। তাঁর দল জিতেছে। যিনি তাঁকে হারিয়েছেন তিনি বিরোধী দলনেতা হয়েছেন।”
শুভেন্দুর অভিযোগ, তিনি এই কথা বলার পরই বাকি শাসকদলের বিধায়করা ‘রে রে’ করে ওঠেন। বিরোধী দলনেতার কথায়, “একেবারে হুল ফোটার মতো ফুটেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চোখের ইশারায় রে রে করে উঠেছেন ওই কোম্পানি কর্মচারিরা, ল্যাম্পপোস্টরা। স্পিকারকে আইনমন্ত্রী কানে কানে বললেন, আর স্পিকারও বললেন এটা বিচারাধীন বিষয়। আমরা তৃণমূলের টিকা-টিপ্পনি হইহই প্রতিহত করার ক্ষমতা রাখি। কিন্তু অধ্যক্ষ যদি এমন ভূমিকা নেন! তাই আমরা আজ বিধানসভা বয়কট করলাম।”
সূত্রের খবর, এদিন দলত্যাগ নিয়ে শুভেন্দু অধিকারীকে খোঁচা দেন নৈহাটির তৃণমূল বিধায়ক পার্থ ভৌমিক। দিদিকে বলো কর্মসূচির প্রসঙ্গ তুলে বলতে গিয়ে তিনি নাকি শুভেন্দুকে উদ্দেশ্য করে কটাক্ষ করেন। ওই ‘কটাক্ষ’ নিয়েই তোলপাড় শুরু হয় বিধানসভায়।