Rajib Ghosh – ছাত্ররাজনীতি দিয়েই হাতেখড়ি’। যে সময় ছাত্র রাজনীতি শুরু করেছি সেই সময় বাংলায় সিপিএমের রাজত্ব চলছে। কেন্দ্রে ভিপি সিং এর সরকারের সিপিএম সঙ্গী। তাপস রায়ের নেতৃত্বে জেলার সম্পাদক হই। তারপর শুভঙ্কর সরকারের নেতৃত্বে ধীরে ধীরে রাজনীতির ময়দানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় আসা। সেই সময় সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করার যথেষ্ট কঠিন ছিল। কারণ তখন রাজনৈতিক প্রচার করার সুযোগ ছিলনা। তারা যে ভাষায় বললে বুঝতে পারত সেই ভাষায় আমাদের জবাব দিতে হতো। তারপর ধীরে ধীরে সমস্ত ছাত্র সংগঠনের সদস্যরা সংঘবদ্ধ হয়ে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করি। সেই লড়াই করতে গিয়ে বহু সময় পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। এক সময় বোঝা গেল এই কংগ্রেসকে দিয়ে সিপিএমকে তাড়ানো যাবে না। কারণ কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব এবং রাজ্য নেতৃত্বের মনোভাব তার দ্বারা এটা সম্ভব নয়। তাই সেই সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল তৈরি করেছিলেন। সেই তৃণমূলে আমরা ছিলাম। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর দেখা গেল সিপিএমের হার্মাদ দলে ঢুকে গেল। টলিউডের তারকা যে সমস্ত আমলাদের একটা সময় সিপিএমকে মদত করার অভিযোগ ছিল তারাও সবাই তৃণমূলে চলে এলো। তৃণমূল টা হাইজ্যাক হয়ে গেল। যে সিপিএমের বিরুদ্ধে লড়াই করতাম সেই সিপিএমের হার্মাদরাই তৃণমূল পরিচালনা শুরু করলো। তারপর দিদি হয়ে গেলেন পিসি। পিসি হয়ে যাওয়ার পর এইসব গন্ডগোলের শুরু। আমাদের ক্ষোভ-বিক্ষোভ জানানোর জন্য একটা প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজন। তাই তারপরে আমরা বিজেপিতে যোগ দিই। Campaign Calling Media-র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই কথা বললেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ। তিনি আরো বলেন, রাজনীতির প্রতি শ্রদ্ধা নষ্ট হয়ে গিয়েছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব মানে তোলা তুলে খায়। তার প্রতি মানুষের সেই সম্মান আর নেই। গত 10 বছরের সেই পরিস্থিতি আরো বেশি হয়েছে। অনলাইন লটারি নিয়ে সজল বলেন, সেই সময় যারা অনলাইন লটারি চালাত তাদের একটি চ্যানেল ছিল। সেই চ্যানেলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিরোধিতা করা হতো এবং প্রচুর বিজ্ঞাপন দিতে বলে কেউ তাদের বিরোধিতা করত না। মমতার নির্দেশে আমরা তার বিরুদ্ধে আন্দোলন করি। সেই আন্দোলন করার পরে আমরাই অসম্মানিত হতে থাকি। তখন থেকেই রাজনীতিতে নিষ্ক্রিয় হয়ে গেলাম। তৃণমূলের দলের অভ্যন্তরীণ সমন্বয় প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দলের মধ্যে সমন্বয় কিভাবে থাকবে। এখন টলিউডের সঙ্গে সমন্বয় হয়েছে। এক ঝাঁক তারকাদের প্রার্থী করা হয়েছে। তাদের সেই ধরনের গ্ল্যামার ও নেই। যদিওবা জেতে তার আগামী দিনে মানুষের কাজ করবে না। এর আগে যেসব তারকারা নির্বাচন জিতেছে তারা মানুষের সঙ্গে থাকে নি। এবারের নির্বাচনে বুঝতে পারবে। এরপরে রাজ্যের উন্নয়ন প্রসঙ্গে বলেন, এটা কোন উন্নয়ন। বাংলার কি সত্যিই উন্নয়ন হয়েছে? যেখানে দু টাকা কিলো চাল দিতে হয় বিভিন্ন ধরনের ভাতা দেওয়া হচ্ছে কেন এগুলো দেওয়া হবে?মানুষ কাজ চাইছে। কর্মসংস্থান হোক। নিজে কাজ করে আয় করে জীবন যাপন করতে পারবে। সেটা প্রয়োজন। পেট্রোল ডিজেল গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি প্রসঙ্গে সজলের মন্তব্য, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় হলে হয়তো দাম কমিয়ে দিতেন। কিন্তু বিজেপি সেটাই করেনি। কারণ তারা সংস্কার করতে চাইছে। Today’s pain Tomorrow’s gain এতে বিশ্বাস করে বিজেপি। দাম বৃদ্ধির ফলে সারা ভারতের মানুষের অসুবিধা হচ্ছে। তবুও ব্রিগেড দেখেছেন সেখানে প্রচুর মানুষের এসেছে। মানুষের মধ্যে বিভেদ সেইদিন তৈরি হয়েছে যেদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মোয়াজ্জেমদের জন্য ভাতা ঘোষণা করেছেন। তারপর যখন দেখলেন তারা ক্ষেপে গিয়েছে তখন পুরোহিত ভাতা ঘোষণা করলেন। এর আগে অনেক ব্রিগেড দেখেছি কিন্তু বিজেপির এই ব্রিগেডের মত দেখিনি। শাসক দলে থাকলে ব্রিগেডে লোক নিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু বিরোধী দলে যখন এত বড় ব্রিগেড হয় তখন বোঝা যায় যে কি হতে চলেছে। তৃণমূলের হয়ে যারা এখন মিছিল করছে তারাই হয়তো তৃণমূলকে ভোট দেবে না। যখন বাম কংগ্রেস জোট ব্রিগেড করেছে বিজেপি ব্রিগেড করেছে তখন সরকারি দল তৃণমূলের ব্রিগেড করতে পারল না কেন? প্রশ্ন করলেন বিজেপি নেতা সজল ঘোষ।