সারা মুর্শিদাবাদ জেলা জুড়ে তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ পাচ্ছে। দলের শুরু থেকেই যে কর্মীরা লড়াই করেছেন আজকে তারা কোনো জায়গায় প্রার্থী হতে পারেননি। তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার এখন কয়েকটি শর্ত আছে। প্রথম শর্ত টাকা আছে কিনা। দ্বিতীয় শর্ত দলকে টাকা দিতে পারবে কিনা। তৃতীয় শর্ত বন্দুক গুলি আছে কিনা। এটাই তৃণমূলের টিকিট পাওয়ার মূল শর্ত। তৃণমূলকে আক্রমণ করে এই কথা বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী। তিনি এদিন তৃণমূল কংগ্রেসের যে সমস্ত পুরনো কর্মীরা দীর্ঘদিন ধরে দলের হয়ে লড়াই করেছেন তারা আজ দলের সম্মান পাননি বলে অভিযোগ করেন। এই প্রসঙ্গে অধীর আরো বলেন, যাদের অর্থ আছে বোমা-গুলি বন্দুকের উপর নিয়ন্ত্রণ আছে এই ধরনের লোকেদের তৃণমূল প্রার্থী করছে। একদিকে অর্থ শক্তি আরেকদিকে পেশিশক্তি। যারা আছে তারাই তৃণমূলের রয়েছে। যারা জন্মলগ্ন থেকে তৃণমূল করেছে সততার সঙ্গে দলটা করতে চেয়েছে তারা আজ বীতশ্রদ্ধ হতাশ। তাই তারা মনে করছে একমাত্র কংগ্রেস দলে গেলে সেই সম্মান এবং মর্যাদা পাওয়া যাবে। হয়তো কংগ্রেস টাকা দিতে পারবে না কাটমানি তোলাবাজি করতে পারবে না প্রার্থী হয়তো সকলকে করতে পারবে না কিন্তু প্রাপ্য সম্মান পাওয়া যাবে। তাই তারা কংগ্রেসে যোগদান করতে চাইছে। তিনি আরো বলেন, তৃণমূল তৈরি হয়েছে লেনা আর দেনার উপর ভিত্তি করে। কোনো আদর্শ রাজনীতি নেই। মমতা ব্যানার্জির দুরবস্থা তাই তারকাদের উপর নির্ভর করতে হচ্ছে। তৃণমূলে একজন আমলা যোগ দিয়েছেন। যিনি এর আগে মুর্শিদাবাদ জেলায় গরু পাচারের নায়ক মাদক মামলায় বিরোধী রাজনৈতিক দলের কর্মীদের ফাঁসানোর নায়ক তিনি আজ তৃণমূল কে শক্তিশালী করার জন্য তাদের টিকিটে প্রার্থী হয়ে লড়াই করছেন। তাহলে দলের কর্মীরা যাবে কোথায়? প্রশ্ন অধীরের। বিধানসভা নির্বাচনের আগে তৃণমূল কংগ্রেসে বহু অভিনেতা-অভিনেত্রী শিল্পী কলাকুশলীরা যোগ দেন। এছাড়াও খেলোয়াড় এবং আমলারাও যোগ দেন। সেই প্রসঙ্গে অধীর চৌধুরী তৃণমূলের উদ্দেশ্যেই কথা বলেন। তিনি আরো বলেন, এখন আর রাজনীতি করে তৃণমূলের টিকিট পাওয়া সম্ভব নয়। তৃণমূল রাজনৈতিকভাবে দেউলিয়া হয়েছে। তাদের লক্ষ্য ছিল বামফ্রন্টকে হারানো সেটা হয়ে যাওয়ার পর তাদের সামনে আর কোনো লক্ষ্য নেই। এখন শুধু দিদির লক্ষ্য মুখ্যমন্ত্রী হওয়া আর ভাইপোর ভবিষ্যৎ তৈরি করা। আর অন্য ভাইয়েরা যা খুশি হোক। এবারের প্রার্থী তালিকায় সংখ্যালঘুদের ছেটে দেওয়া হয়েছে। মোদির সঙ্গে লড়াই করতে গিয়ে মুসলিমদের ছেটে হিন্দুদের প্রার্থী বাড়ানো হয়েছে। মোদির থেকে বড় হিন্দু হতে হবে মমতাকে। তাই যে সংখ্যালঘুদের উপর নির্ভর করত তাদের এখন প্রার্থী তালিকা থেকে ছেঁটে দেওয়া হয়েছে। এর পরেই অধীর চৌধুরী জানান, বেচারাম মান্না কয়েকদিন আগে ফোন করেছিল। কংগ্রেসের হয়ে প্রার্থী হতে চাইছিল। তাকে জিজ্ঞাসা করি কোন জায়গায় তখন তিনি বলেন সিঙ্গুরে। তখন তাকে জানিয়ে দিই ওটা সিপিএমের আসন। তাদের সঙ্গে কথা বলুন। তার পরেই দেখলাম বেচারাম মান্নার নাম রয়েছে তৃণমূলের প্রার্থী তালিকায়। টিকিট দিলে দলে থাকবে তা না হলে দলে থাকবেনা। এটাই এখন নিয়ম। তৃণমূলের কর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ দিন দিন বাড়ছে বলেই এদিন বললেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।