Rajib Ghosh– ‌ 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে কংগ্রেসের টিকিটে বিধায়ক হওয়ার পর কি কারনে পরে আবার তৃণমূল কংগ্রেসে ঢুকলাম এটা একটা বড় প্রশ্ন। তার কারণ সেই সময়ে কালনাঘাট এক নৌকাডুবিতে শান্তিপুরের বেশকিছু মানুষ বিপদগ্রস্ত হন। সেই সময় রাজ্য পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গিয়ে পুলিশের অমানবিক অত্যাচার এর সম্মুখীন হই। পুলিশ যাদের উপরে অত্যাচার করে তাদের নামে মামলা দিয়ে দেয়। আর্থিক ভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের পাশে দাড়াতে হয়। বিধায়ক হয়েছি 52 শতাংশ মানুষের ভোট পেয়ে। তারপর অন্যান্য নেতার মত বড় পদ নিয়ে থাকতে পারতাম। একদিকে মিথ্যা মামলা দেওয়া, নিজের কেন্দ্রে 6 মাস ঢুকতে পারিনি, মানুষের হয়ে কাজ করার ক্ষেত্রে সমস্যা তৈরি হওয়ার কারণে বিধায়ক হিসেবে মনে হয়েছে প্রথমেই যে মানুষরা নির্বাচিত করেছে তাদের পাশে দাঁড়ানো উচিত। এক প্রশ্নের উত্তরে Campaign Calling Media-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই জবাব দিলেন শান্তিপুরের বিধায়ক ও ও বিজেপি নেতা অরিন্দম ভট্টাচার্য। তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যাওয়া নেতা-নেত্রীদের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যতদিন তৃণমূলে ছিল ভাল ছিল। যখনই বিজেপিতে চলে গেল তখনই খারাপ। তৃণমূলে থাকাকালীন মুর্শিদাবাদ মালদায় নির্বাচন করাতে যেতে হতো শুভেন্দু অধিকারী কে। উপনির্বাচনে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। দলের হয়ে তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। আর যখনই বিরোধিতা করেছেন তাদের তোলাবাজির সিস্টেমের অংশ হতে চাননি তখনই তারা খারাপ হয়ে গেলেন। এটা মানুষ বোঝে। অভিষেকের বাড়িতে সিবিআই যাওয়ার প্রসঙ্গে অরিন্দম বলেন, বিদেশের ব‍্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট করায় কোন অসুবিধা নেই। কিন্তু বিদেশে বিভিন্ন কারণে অ্যাকাউন্ট খুললে সেটা দেশে জানাতে হয়। যদি না জানানো হয় সে ক্ষেত্রে মনে হয় কি কারন। সেই অ্যাকাউন্টে কোথা থেকে টাকা আসছে, কিভাবে লেনদেন হচ্ছে সেই বিষয়ে জানতে চাওয়া হয়। এখানে যেন মনে হচ্ছে রাজ্য সরকার মানুষের কাছ থেকে অনেক কিছুই গোপন রাখতে চাইছে।স্বচ্ছতার সঙ্গে সামনে সবকিছু বলা উচিত। আইন-শৃংখলার প্রশ্নে তার মন্তব্য, এর আগে রাজ্যে বিধায়ক হত্যা হয়েছে। এবার মন্ত্রীর উপর আক্রমণ করা হলো। যারা মূলত দুর্নীতি তোলাবাজির সঙ্গে যুক্ত যাদের অসুবিধা হচ্ছে তারাই হয়তো এই ধরনের আক্রমণ করতে পারে। রাজ্যে বিধায়ক মন্ত্রীর উপর আক্রমণ হলে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি কি সেটা সহজেই বোঝা যায়। রাজ্যে মানুষ সুরক্ষিত নয় বলেই তৃণমূলের পক্ষে নেই। আর সেই কারণেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে গালাগাল করা হচ্ছে। বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার গাড়িতে হামলা করা হয়েছে। কারণ তৃণমূল বুঝতে পেরেছে মানুষ তাদের পক্ষে নেই। রাজ্য সরকারের দুয়ারে সরকার কর্মসূচি প্রসঙ্গে বলেন, কেন দুয়ারে সরকার করতে হচ্ছে? প্রচার করে দেওয়া হচ্ছে যেকোনো একটি মাঠে বিভিন্ন বিভাগের আধিকারিকরা উপস্থিত থাকবেন। সেখানে মানুষ তাঁর অভিযোগ নিয়ে যাবে। তাদেরকে একটি কুপন ধরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তারপর সেই মানুষটা অপেক্ষায় থাকছেন। তারমানে এতদিনে মানুষ সেই সমস্ত পরিষেবা পায়নি। তাই লাইন দিচ্ছে দুয়ারে সরকার কর্মসূচিতে। মানুষকে ভাওতা দেওয়া হচ্ছে। দুয়ারে সরকারের মাধ্যমে মানুষের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তারপর একটা এজেন্সিকে দিয়ে তাদেরকে ফোন করানো হচ্ছে। সেই ফোনে বিভিন্ন ধরনের কথা বলা হচ্ছে। এটা একটা গিমিক চলছে। একটা মার্কেটিং এজেন্সি কে দিয়ে পচা আপেলকে এক্সপোর্ট কোয়ালিটির আপেল বলে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড একটা বড় জোচ্চুরি বলে মন্তব্য তার। তার কথায়, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এ ফিরিয়ে দিলে থানায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে। মানুষ থানায় গিয়ে অভিযোগ জানানোর জন্য গেলে সেখানে কোনো কাজ হয়না। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এ রাজ্যের সমস্ত মানুষকে চিকিৎসা পরিষেবা দেওয়ার মতো অর্থ নেই সরকারের কাছে। মানুষকে কিভাবে পাগল বানাচ্ছেন ভাবুন। 5 টাকার ডিম ভাত দিচ্ছেন। মানুষ নিজের উপার্জন করা অর্থে মন্ডা মিঠাই খাবে সেই বাংলা দেখি। ভোটের আগে দুই মাসের জন্য পাঁচ টাকার ডিম ভাতে মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়াবে সেই বাংলা দেখিনা। মানুষের অসহায়তার সুযোগ নেবেন। সেই দুর্বল কমজোর বাংলা দেখতে চাই না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি আত্মনির্ভর ভারত গড়ার কথা বলছেন। সেখানে পরিবেশ রক্ষার জন্য অল্টারনেটিভ এনার্জিকে ব্যবহারের দিকে গুরুত্ব দেয়ার কথা বলছেন। সস্তার রাজনীতি করলে হবে না। মানুষের ভবিষ্যৎ কে নিরাপদ করতে হবে। সেটা রাজনীতি। একটা সরকার 10 বছর ধরে উন্নয়ন করবো বলে ক্ষমতায় এসে রাজ্যটাকে এতটাই পিছিয়ে নিয়ে গেল। রাজ্যের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এমন জায়গায় চলে এসেছে সরকার চালানোটাই সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেন্দ্রের সঙ্গে একটা সংঘাত তৈরি করে রেখেছে। এরপরে প্রশ্নের উত্তরে অরিন্দম বলেন, রাজ্য সরকার এর দ্বারা প্রভাবিত ওপিনিয়ন পোল যখন দেখাচ্ছে বিজেপির সংখ্যা যথেষ্ট বৃদ্ধি পাচ্ছে। তার অর্থ 200 আসনে জয় লাভ করবে বিজেপি।