Rajib Ghosh– দলে যোগ দেওয়ার পর থেকে একের পর এক জনসভা করে চলেছেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুধু তাই নয় সেই জনসভা থেকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করছেন তৃণমূল কংগ্রেসকে। প্রায় প্রতিটি জনসভায় যুব তৃণমূল সভাপতি এবং সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে তোলাবাজ বলছেন তিনি। তৃণমূল কংগ্রেস প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। সেখানে তিনি কর্মচারী হিসেবে থাকতে পারবেন না বলেই তৃণমূল কংগ্রেস ছেড়ে দিয়ে বৃহৎ রাজনৈতিক দলে বিজেপিতে যোগদান করেছেন বলে জানান শুভেন্দু। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় কে নেতা বলতে রাজি নন তিনি। একই বক্তব্য তিনি এদিনের উত্তরবঙ্গের আলিপুরদুয়ারের জনসভা থেকে বললেন। BJP নেতৃত্বের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে রাজ্যে পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রেখেই পরিবর্তন যাত্রার সূচনা হয়েছে। যদিও এই পরিবর্তন যাত্রা নিয়ে TMC-র পক্ষ থেকে বিভিন্ন বক্তব্য পেশ করা হয়েছে। আলিপুরদুয়ারে পরিবর্তন যাত্রায় যোগ দিয়ে সভা থেকে শুভেন্দু অধিকারী বলেন, ঠাকুর পঞ্চানন বর্মার জন্মদিবসে প্রণাম জানিয়েছি। তার আশীর্বাদ যেন পশ্চিমবঙ্গের অগ্রগতিতে থাকে এই প্রার্থনা করব। উত্তরবঙ্গে লোকসভা নির্বাচনে BJP-র যথেষ্ট ভাল ফলাফল হয়েছে। TMC পর্যুদস্ত হয়েছে। এই প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেন, মানুষ বলছে লোকসভা নির্বাচনে সেমিফাইনাল হয়েছে। বিধানসভা নির্বাচনে হবে ফাইনাল। তৃণমূল কংগ্রেস যাবে বিজেপি আসবে। বাংলায় প্রকৃত পরিবর্তন হবে। পদ্মফুল কাটলে নাকি ডাটি শুকিয়ে যায় মন্তব্য করে বলেন, ভগবান রামচন্দ্র দেবী দুর্গার পূজা করেছিলেন অসুর কে বধ করার জন্য। এর পরেই অভিষেকের উদ্দেশ্যে তীব্র আক্রমণ করে বলেন, শুনে রাখুন তোলাবাজ ভাইপো ডাটি শুকোবে না। আর বলছেন ঘাসফুল কাটলে নাকি ঘাসফুল গজায়। ঘাসফুল আমরা কাটতে আসিনি। নিচ থেকে উপড়ে ফেলবো। যাতে আর গজানোর কোনো সুযোগ না থাকে। প্রসঙ্গত, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এর আগের জনসভা থেকে BJP-কে আক্রমণ করে বলেছিলেন পদ্মফুলের ডাটি শুকিয়ে যাবে। রাজ্যে কখনোই বিজেপি ক্ষমতায় আসতে পারবে না। সেই প্রসঙ্গে শুভেন্দু এই কথা বললেন। এরপরে উত্তরবঙ্গের মানুষ আজ পর্যন্ত কি পেয়েছেন? সেই প্রশ্ন করেন। এখন বলছে 294 টি কেন্দ্রে তিনি প্রার্থী। তাহলে কি রাজবংশী সমাজের প্রতিনিধি দরকার নেই? যদিও তারা রাজবংশী সমাজকে বিশ্বাসঘাতক বলে। সম্প্রতি তৃণমূল নেত্রী এবং রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জনসভা থেকে বলেছেন 294 টি কেন্দ্রে তিনি প্রার্থী। এর আগে 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে তিনি এই একই পথে হেঁটেছিলেন। যদিও সেই নির্বাচনে তৃণমূল কংগ্রেস জয়লাভ করে এবং সরকার গঠন করে। এবার তার সেই বক্তব্য প্রসঙ্গে শুভেন্দু আরো বলেন, অমিত শাহজি এসে মদনমোহন মন্দিরে পুজো দিয়েছেন। তার পরে রাজবংশী সমাজের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প ঘোষণা করেছেন। রাজ্যে কর্মসংস্থানের খারাপ পরিস্থিতি তুলে ধরেন তিনি। এখনো পর্যন্ত রাজ্য সরকার চাকরি দিতে পারেনি। এর পরে তিনি স্বাস্থ্য সাথী কার্ড, চশমা বিতরণ সহ একাধিক রাজ্য সরকারের প্রকল্প নিয়ে অভিযোগ করেন। সেগুলিকে নির্বাচনের আগে মানুষকে প্রভাবিত করার জন্য করা হচ্ছে বলে জানান শুভেন্দু। পাশাপাশি যে চশমা বিতরণ করা হচ্ছে সেখান থেকে তোলাবাজ ভাইপো এন্ড কোম্পানি 25 টাকা করে কমিশন নিয়েছে বলে অভিযোগ করেন তিনি। রাজ্য সরকারের মন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের গুরুত্বপূর্ণ পদে থাকার কারণে তিনি জানেন আলিপুরদুয়ার জেলা পরিষদ রিগিং এবং কারচুপি করে তৃণমূল জয়লাভ করেছে বলে এদিন জানালেন শুভেন্দু। অন্যদিকে বামপন্থীদের উদ্দেশ্যে বিজেপিকে ভোট দেওয়ার জন্য আহ্বান জানান। তাহলে পঞ্চায়েত নির্বাচনে সকলেই নিজেদের প্রার্থীদের দাঁড় করাতে পারবেন। এই কথার মধ্যে দিয়েই তিনি ফের একবার রাজ্যের সমস্ত জেলা পরিষদ তৃণমূল লুঠ করে জয়লাভ করেছে বলে অভিযোগ করেন বিজেপি নেতা শুভেন্দু অধিকারী।