Rajib Ghosh– শুভেন্দু অধিকারী কে নন্দীগ্রাম সংলগ্ন এলাকার মধ্যে আটকে রাখার জন্যই নন্দীগ্রাম বিধানসভা আসন থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী Mamata Bandyopadhyay একই সাথে এটাও ভেবেছেন যদি নন্দীগ্রাম থেকে জয়ী হতে পারেন তাহলে দীর্ঘদিন ধরে যে তার ইচ্ছা জাতীয় রাজনীতিতে মহাগঠবন্ধন এর নেত্রী হবেন, প্রধানমন্ত্রী হওয়ার দিবা স্বপ্ন দেখার মধ্যে দিয়েই তিনি এই নন্দীগ্রাম থেকে প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা করেছেন। এটা তার অহমিকা। আর অহংকার থেকেই পতন হয়। Campaign Calling কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই কথা জানিয়েছেন BJP-র রাজ্য সহ-সভাপতি Bharati Ghosh এই প্রসঙ্গে তাঁর আরও বক্তব্য, যেভাবে রাহুল গান্ধী একসময় একাধিক আসন থেকে প্রতিদ্বন্দিতা করতেন যাতে জয় পেতে পারেন ঠিক সেইভাবেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় একই পথে হাঁটছেন। 34 বছরের বাম জমানায় অপশাসন থেকে মানুষ পরিবর্তনের দিকে লক্ষ্য রেখেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিতিয়ে এনেছিলেন। ভবানীপুরে মমতার জয়ের সময় TMC-র 47. 67 শতাংশ ভোট ছিল এবং BJP-র ছিল অনেক কম। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সততার প্রতীক যখন নষ্ট হয়ে গিয়ে তার পরিবার অসততার প্রতীক হিসেবে উঠে এলো সেই সময়ে লোকসভা নির্বাচনে BJPর ভোট শতাংশ অনেকটাই বেড়ে গেল। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মুখ দেখে আর কাজ হয় না। তাহলে এইভাবে ভোট শতাংশ বাড়তো না। এই প্রসঙ্গে ভারতী ঘোষ নন্দীগ্রামের ভোট শতাংশের হিসাব তুলে ধরেন। সেখানে তিনি জানান, নন্দীগ্রামে TMC-র ভোট ছিল 67 শতাংশ এবং BJP-র ছিল 5.04 শতাংশ। পরবর্তীতে সেখানে BJP-র ভোট শতাংশ অনেকটাই বেড়ে প্রায় 30 শতাংশে পৌঁছে গেল। এ থেকেই বোঝা যায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাবমূর্তি আর কাজ করছে না। ভারতীর কটাক্ষ, দিদিকে বলো কর্মসূচি নেওয়া হল কেন? সেখানে দিদিকে বলো না বলে প্রশাসনকে বলো হবে না কেন? কারন মমতার ভাবমূর্তি তুলে ধরার একটা চেষ্টা চলছে। দীর্ঘদিন ধরেই রাজ্য সরকারের সমস্ত ক্ষেত্রে কাটমানি সহ দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন তিনি। কাটমানি যারা নিয়েছে তাদের কোনো শাস্তি হয়নি। চাল চুরি, ত্রিপল চুরি, কাটমানির বাংলা হয়ে গেছে। এখন টিকা চুরির বাংলা। রাজ্য সরকারের সাম্প্রতিক কাজকর্মের জন্য রাজ্যের মাথা নিচু হয়ে যাচ্ছে। আমরা লজ্জিত। এই মন্তব্য করেন ভারতী। Campaign Calling-এর প্রশ্নের জবাবে তিনি আরো বলেন, গণতন্ত্রে যখন কোনো দল তৈরি হয় মিলিত ভাবে কাজ করে। অথচ আমপানের সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কন্ট্রোলরুমে রয়েছেন। দলের অন্যান্য কোনো MLA, Leader, জনপ্রতিনিধিরা মানুষের পাশে এসে দাঁড়ান নি। কোভিডের সময় মুখ্যমন্ত্রী একা রাস্তায় দাঁড়িয়ে গোলচক্কর কাটছেন। কেউ নেই। একা উনি শিক্ষা, শিল্প, স্বাস্থ্য দপ্তর কি সামলাতে পারবেন? প্রশ্ন ভারতীর। তিনি আরো বলেন, এটা মুখ্যমন্ত্রীর অহম। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় BJP-কে বলেছেন মাওবাদীদের থেকেও ভয়ঙ্কর। এক জনসভায় তিনি এই মন্তব্য করেছেন। সেই মন্তব্য প্রসঙ্গে Campaign Calling কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে Bharati জানান, উনি BJP কে ভয় পাচ্ছেন। কারন জানেন BJP-র মত সর্বভারতীয় একটি রাজনৈতিক শক্তি। তার সঙ্গে তৃণমূলের মত One Man Party কখনো পেরে উঠবে না। এই প্রসঙ্গে তিনি একটি গল্পের উদাহরণ দিয়ে বলেন, ডন কুইক্সোট এবং সঙ্গোপানের মত হয়েছে বিষয়টি। কলকাতায় BJP-র Rally-তে হামলার প্রসঙ্গে তার বক্তব্য, হঠাৎ একটি বড় মিছিলের উপর যদি হামলা হয় তাহলে সেই কয়েক হাজার মানুষের মিছিলের থেকে মানুষ Quick React করতে চায়। সেটা সহজেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। মানুষ ক্ষিপ্ত হয়ে গেলে TMC নেতাদের বাড়ি থেকে বের হতে দেবে না। এরপরে তৃণমূলের উদ্দেশ্যে জানান, যাতে কোনো ধরনের Civil Movement না হয় সেই দিকে লক্ষ্য রেখে এই ধরনের মানুষকে কোনো মিছিলের ওপর ঢিল পাটকেল ছোড়ার জন্য পাঠাবেন না। রাজ্যের সংখ্যালঘু অধ্যুষিত এলাকায় এখনো পর্যন্ত BJP সেইভাবে সাংগঠনিক দিক থেকে ভিত মজবুত করতে পারেনি। সেই প্রসঙ্গে ভারতী ঘোষ Campaign Calling কে জানান, বিজেপির শ্লোগান সবকা সাথ সবকা বিকাশ সবকা বিশ্বাস অর্থাৎ সকল জাতির মানুষকে নিয়ে চলার চেষ্টা করব আমরা। ভারতীয় জনতা পার্টি চেষ্টা করছে সংখ্যালঘুদের সঙ্গে মতবিনিময়ের মাধ্যমে তাদের বোঝানোর। তৃণমূল যেভাবে চেষ্টা করছে ওদের ভুল বুঝিয়ে একটা সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা সৃষ্টি করতে। তৃণমূলের ভুল বোঝানোটা ঠিক করতে করতেই আমাদের সময় চলে যাচ্ছে। সেই কারণেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডার উপর হামলা চলেছে। সংখ্যালঘু ভাই-বোনেরা পদ্মফুলে ভোট দেবেন। এই আশা রাখি। এরপরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন ক্ষেত্রের সামাজিক প্রকল্পের প্রসঙ্গ নিয়ে বলেন ভারতী। রাজ্য অল্পসংখ্যক পুরোহিতকে পুরোহিত ভাতা দিয়ে সম্মান নষ্ট করছে। ইমামদের ভাতা দিয়ে এবং অল্প পুরোহিতকে ভাতা দিয়ে একটা শ্রেণীগত দাগ টেনে দিয়ে সাম্প্রদায়িকতার আবহাওয়া তৈরি করে দিচ্ছে TMC 30 শে জানুয়ারি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ রাজ্যে আসছেন। সেই সময় তৃণমূল থেকে আরও অনেকেই যোগদান করতে পারেন বলে জানিয়েছেন তিনি। তাঁর কথায়, ভাঙ্গনের সানাই জোরে বাজছে। এরা শুনতে পাচ্ছে না। TMC-র সরকার থাকবে কিনা তা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিচ্ছে। যাদের সামনে নেই পিছনেও নেই তারাই এগোতে ভয় পায়। চমকানি হচ্ছে, ধমকানি হচ্ছে, পুলিশ দিয়ে কেস দেওয়ার ভয় দেখানো হয়েছে।এই স্থিতি কে বলা হয় Stage of Political Instability এরা হয়তো পরবর্তীতে আসবেন।শতাব্দী, প্রসূনের বিষয়ে বলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে রসিকতার সুরে স্টেশনের একটি গল্প বলেন। তুম কুছ ভি করো তো তুমহারা জমিনদারি অউর হাম সচ বোলে তো হাম বাহারি। তৃণমূলের কথা শুনলে হাসি পায়। কেডি সিং বহিরাগত। তাকে নিয়ে এসে রাজ্যসভার MP করল TMC একি বহিরাগত নয়? কেডি সিং কে কেন MP করা হলো? তাহলে কি অ্যালকেমিস্ট চিট ফান্ডের একটা মোটা টাকা তৃণমূলের পার্টি ফান্ডে দেওয়া হয়েছে? প্রশ্ন ভারতীর। অ্যালকেমিস্ট চিটফান্ড মানুষের বহু টাকা প্রতারণা করেছে। তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নেননি। কেডি সিং বলতে পারবে তৃণমূলের পার্টি ফান্ডে কত টাকা দিয়েছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এর প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে ভারতী বলেন, স্বাস্থ্য সাথী ব‍্যাড স্ট্রোক। ভেবেছিলো ছক্কা মারবে। কিন্তু হলো না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন স্বাস্থ্য সাথী কার্ড এনেছেন কোনো স্বাস্থ্য বীমা কোম্পানির নাম বলেননি। রাজ্যের 10 কোটি মানুষের জন্য যদি স্বাস্থ্যখাতে 11 হাজার 280 কোটি টাকা বরাদ্দ হয়ে থাকে প্রত্যেকটি মানুষকে যদি স্বাস্থ্য সাথীর সুবিধা দিতে হয় তাহলে মাথাপিছু 1117 টাকা 94 পয়সা হয়। বিশ্বে এমন কোনো বীমা কোম্পানি হয়নি যে এই টাকায় 5 লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বীমার খরচ দেবে। ভোট পর্যন্ত এভাবে চালাতে চাইছে। মমতার সরকার হাসপাতাল, নার্সিংহোম কে বলেছে এখন ম্যানেজ করুন নির্বাচনের পরে আপনারা যত খুশি বিল বাড়িয়ে নেবেন। স্বাস্থ্যসাথী বুমেরাং হলে তখন বুঝতে পারবে। রাজ্যে শিল্প আসছে না। বেকারত্ব বাড়ছে। পশ্চিমবঙ্গের সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা এটা। রাজ্য তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক, নেতারা সম্প্রতি প্রথম দফায় করোনার টিকা নিয়েছেন। সেই বিষয়ে বিজেপির পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ভারতীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, কৈভিডের থেকেও বড় প্যানডেমিক দুর্নীতি। এরা এখন ভ্যাকসিন চোর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজ্যবাসীকে বিনামূল্যে টিকা দেওয়ার প্রসঙ্গে ভারতী ঘোষের কটাক্ষ, এই বিষয় নিয়ে আর মাথা ঘামাবেন না। তাহলে এরপর পাবলিক পেটাবে। সি ভোটারের সমীক্ষা নির্দিষ্ট কোনো জায়গায় গিয়ে করবার নির্দেশ থাকলে এই ধরনের ফলাফলই বেরিয়ে আসতে পারে। তৃণমূলের পকেটে গিয়ে সমীক্ষা করলে এই ফল হবে। টাকা খরচ করে এই ধরনের সমীক্ষা করে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা হচ্ছে বলে অভিযোগ ভারতী ঘোষের। এদিন Campaign Calling- কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে রাজ্যের সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করলেন BJP Vice-president Bharati Ghosh.