নিজস্ব সংবাদদাতা: তার কথা অনুযায়, ‘বিজেপির পথেই হাঁটছে তৃণমূল। মানুষ যে কারণের জন্যে বিজেপির ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করছে, সেই একই পথ অনুসরণ করছে ঘাস-ফুল শিবিরও’। কার্যত এই ভাবেই তৃণমূলকে নিশানা করলেন বিশিষ্ট আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ।
Campaign Calling এর পক্ষ থেকে একান্ত সাক্ষাৎকারে মুখোমুখি হয়েছিলেন আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। রাজ্যে ঘটে চলা বিভিন্ন ধরনের বিষয় নিয়েই অকপটে নিজের মন্তব্য পেশ করেন তিনি। তার বক্তব্যে উঠে আসে ‘জৈন হাওয়ালা’ কান্ড থেকে শুরু করে দেবাঞ্জন দেব কান্ড, স্টুডেন্ট ক্রেডিট লোন, এমনকি এসএসসির তালিকা প্রকাশের মামলা পর্যন্তও। নিজের স্বমহিমাতেই সবকটা প্রশ্নেরই উত্তর দেন অরুণাভ বাবু।
ভুয়ো ভ্যাকসিনেশন কাণ্ডে দেবাঞ্জনের রক্ষীর সঙ্গে রাজ্যপালের ছবি থেকে শুরু করে এবার জৈন হাওয়ালা কাণ্ডে রাজ্যপালের উপর তোপ দাগল মমতার সরকার। যদিও হাওয়ালা কাণ্ডের চার্জশিটে তাঁর নাম নেই বলে দাবি রাজ্যপালের। জানা গিয়েছে, এই মামলার আইনি জটিলতা এতটাই বেড়ে গিয়েছিল যে, তার ট্রায়ালই হয়নি। অথচ রাজ্যপাল বলেছেন চার্জশিটে তাঁর নাম নেই। এরপরেই রাজ্যসভার মুখ্য সচেতক সুখেন্দ শেখর রায় প্রশ্ন তুলেছেন, “নথিতে এই ধনখড় নামে ব্যাক্তিটি তাহলে কে, সেটা রাজ্যপালই জানান”। বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে সুখেন্দু শেখর বলেছেন, “২৮ জুন মৃত্যু হয়েছে সুরেন্দ্র জৈনের। হাওয়ালা কাণ্ডে অভিযোগ তোলার পরেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর। প্যানিক অ্যাটাকে মৃত্যু নাকি এটা কাকতালীয় ঘটনা, তা খতিয়ে দেখা হোক। রাজ্যপাল দুর্নীতিগ্রস্থ, অপসারণ চেয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাব”।
সুখেন্দু শেখর রায়ের এহেন মন্তব্যকে মানতে নারাজ অরুণাভ ঘোষ। তিনি জৈন হাওয়ালা কান্ডের কেসের ওপর ভিত্তি করে বলেন, “সুপ্রিম কোর্ট যে মামলা খারিজ করে দিয়েছে, যে মামলার কোনও অস্তিত্বই নেই, সেই মামলার চার্জশিট আসবে কোথা থেকে। আর কোথা থেকেই বা রাজ্যপাল অভিযুক্ত হবেন। সুখেন্দুর কাছে অনুরোধ করব সে যেন প্রকাশ্যে কিছু বলার আগে মামলাটি সম্পর্কে ভালো করে জেনে নেই”।
একই সাথে দেবাঞ্জনের রক্ষীর সাথে রাজ্যপালের ছবি প্রসঙ্গ নিয়ে অরুণাভ বাবু বলেন, “তুমি যদি খুনি হও, এবং তোমার সাথে আমার ছবি থাকে, তাহলে প্রমাণ হয়ে যাবে আমি খুনি?” এরই সাথে তিনি যোগ করে বলেন, “রাজ্যপালের ভুল বক্তব্যের জন্যে তাকে আমিও পছন্দ করিনা, কিন্তু তার মানে এই নয় যে তার সম্পর্কে বাজে কিছু কারণ তৈরি করব। তৃণমূল নিজেদের যোগ্যতা হারিয়ে ফেলছে”।
এদিন তৃণমূলের প্রতি একরাশ অভিমান রেখে অরুণাভ ঘোষ বলেন, “ওরা বিজেপির পথই অনুসরণ করছে। বিজেপিকেও মানুষ যেমন পছন্দ করছে না, ঠিক তেমনিই তৃণমূলের প্রতিও মানুষ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছে। ২১১টি আসনই তাদের জন্যে কাল হবে। পুরসভা নির্বাচনেই তার ফল হাতেনাতে পাবে তৃণমূল”।
এসএসসির তালিকা প্রকাশ নিয়েও রাজ্যকে ভর্ৎসনা করেন বিশিষ্ট আইনজীবী। বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর এগুলো শোভা পায়না। উনি না যেনে তালিকা ঘোষণা করতে পারেন না”। একই সাথে স্টুডেন্ট ক্রেডিট লোন নিয়েও রাজ্যকে দোষারোপ করেন অরুণাভ ঘোষ।