নিজস্ব সংবাদদাতা: বর্ধমান উন্নয়ন পর্ষদের উদ্যোগে ও অর্থানুকুল্যে বর্ধমানের রাজ আমলের শূলি পুকুরের সৌন্দার্যায়নের সাথে সাথে তার নাম পরিবর্তন হতে চলেছে চলতি মাসের ৩০ তারিখ। ওই দিন শূলি পুকুরের সৌন্দর্য্যায়নের উদ্বোধন করবেন বিডিএ চেয়ারম্যান ডঃ রবিরঞ্চন চট্টোপাধ্যায়। পাশাপাশি ‘শূলি পুকুর’ এর নাম পরিবর্তন করে ‘জীবন সায়র’ রাখা হয়েছে।
কিন্তু এই ঐতিহাসিক পুকুরের নাম পরিবর্তন করাকে ভাল চোখে দেখছে না বিজেপি।গত শনিবার বর্ধমানে এক সাংগঠনিক বৈঠক করতে এসে রাজ আমলের ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার অভিযোগ তুলেছেন বিজেপির কেন্দ্রীয় সম্পাদক রাহুল সিনহা। রাহুল বাবুর অভিযোগ, “রাজ আমলের ইতিহাসকে মুছে দেওয়ার চক্রান্ত করছে তৃণমূল কংগ্রেস। নতুন করে কোন গঠনমূলক কাজ না করে রাজ্যের অরাজকতা, দুর্নীতি ঢাকতে রাজ ইতিহাসকে পর্যন্ত বদলে দিচ্ছে বর্তমান রাজ্য সরকার”। এদিন তিনি আরও বলেন, “বর্ধমানের ঐতিহাসিক স্থান গুলির মধ্যে একটা এই শূলিপুকুর। কয়েকশো বছর আগে রাজ আমলে প্রতিষ্ঠিত এই পুকুর। এই ঐতিহাসিক স্মৃতিস্থান দেখতে আসত অনেকেই। শূলিপুকুরকে ঘিরে রয়েছে রাজ আমলের ইতিহাস, জানা যায় এই পুকুরের নামকরণের ইতিহাসের কথা। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে কোন উন্নয়ন, নতুন স্থাপনা বা পরিকল্পনা না করেই হঠাৎ করে বাহাদুরি দেখাতে গিয়ে ঐতিহাসিক স্থানের নামটাই বদলে দেওয়া হচ্ছে”।
পুরানো ইতিহাস, ঐতিহ্য কে মুছে দিচ্ছে তৃণমূল সরকার বলে অভিযোগ করেন রাহুল বাবু। যদিও এই বিষয়ে স্থানীয়দের দাবি “বর্ধমানে আমাদের বেশ কয়েকটি সায়র রয়েছে যেমন রাজার আমল থেকে কৃষ্ণ সায়র ,সামসায়র ,রানিসায়র, কমল সায়র পাশাপাশি শুলিপুকুর, রাজবাড়ী, কার্জনগেট এগুলো বর্ধমানের ঐতিহ্য বহন করে”।
বর্ধমানের ইতিহাসবিদ সর্বজিৎ জস জানান বিভিন্ন সময়তো বিভিন্ন জায়গারি নাম বদল করা হয়েছে। ভারতবর্ষে সর্বত্রই করা হয়েছে। যেমন আমাদের বর্ধমান শহরেও করা হয়েছে। অনেক রাস্তার নাম বদল করা হয়েছে, অনেক স্থানের নাম বদল করা হয়েছে। শুলি পুকুরটা আসলে আমাদের রাজ আমলের একটি স্মৃতি, এখানে বলা হয় যে একসময় শুলে চড়াবার সময় ওখানে স্নান করানো হত ওখানে একটি শুল ছিল। যদিও সেই শুলকে আমি নিজের চোখে দেখিনি”।
এদিন তিনি আরও বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে আমরাও আবেদন করেছি বার বার যে শুলি পুকুরে সংস্কার প্রয়োজন। আর তার সাথে সাথে যেটা করা হচ্ছে নামটি পরিবর্তন করা হচ্ছে। শুলি পুকুর নাম থেকে নামটা এখন দেওয়া হচ্ছে যেটা জীবন সায়র। দেখুন শুল দিয়ে মানুষের মৃত্যু হত সেটা এখন মৃত্যুর প্রতীক। তার থেকে জীবন সায়র নামটা বোধহয় আরও বেশি ভালো লাগবে শুনতে। কারন জীবনের জয়োগান সেখানে গাওয়া হচ্ছে”।
Sign in
Welcome! Log into your account
Forgot your password? Get help
Password recovery
Recover your password
A password will be e-mailed to you.