Rajib Ghosh– 2016 সালের বিধানসভা নির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে যারা ছিলেন তাদের অধিকাংশই তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন। তারপর এবার নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তৃণমূলের মুখোশ খুলে গিয়ে আসল চেহারা বেরিয়ে পড়েছে। রাজ্যের মানুষ বুঝতে পারছে কি ভুল করা হয়েছে। কোনো মুখ এইবারে আর কাজ করবে না। 2016 নির্বাচনে জিতে আসা মা মাটি মানুষের সরকারের মা বোধহয় আছে, মাটি সরে গেছে, মানুষ অন্য কথা ভাবছে। ফলে এবারের নির্বাচনে সেই ফলাফল বোঝা যাবে। Campaign Calling Media-র সঙ্গে সাক্ষাৎকারে এই কথা বললেন সংগীতশিল্পী এবং বিজেপি নেতা পিলু ভট্টাচার্য। সম্প্রতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের 294 টি কেন্দ্রে তিনি প্রার্থী বলে জানান। সেই প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি এ কথা বলেন। রাজ্যের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে তার সঙ্গে আলোচনার সময় তিনি আরো বলেন, শিল্পীরা একটা ভয়ের বাতাবরণের মধ্যে রয়েছেন। যাত্রা শিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী, অভিনেতা-অভিনেত্রী, নাট্যকর্মীরা ভেবেছিলেন তাদের সাংস্কৃতিক জগতের ক্ষেত্রে সার্বিক উন্নয়ন হবে। সেটা হয়নি। তবে বর্তমানে যে সমস্ত শিল্পীরা TMC-তে যোগদান করছেন এই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, তারা হয়তো কিছু পাবেন বা অন্যকিছু আশায় এসেছেন। শিল্পীরা সফট টার্গেট। এদের মধ্যে অনেকেই হয়তো চুপচাপ ফুলে ছাপ দেবেন। সেটা বড়ফুল হতে পারে। TMC সরকারের দুর্নীতির প্রসঙ্গে পিলু বলেন, বন সহায়ক পদের দুর্নীতি নিয়ে মমতা এবং রাজীব দুজনের কাছেই প্রমাণ আছে বলে তারা বলেছেন। ফলে একটা কথা পরিস্কার যে দুর্নীতি হয়েছে। এরপরই তিনি কলেজের অনলাইন ভর্তিপ্রক্রিয়ায় দুর্নীতিসহ রাজ্যের অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির প্রসঙ্গ তুলে ধরেন। সেখানে তাঁর বক্তব্য BJP ক্ষমতায় এলে তাকে এই দুর্নীতিগ্রস্তদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করে স্বচ্ছ প্রশাসন তৈরি করতে হবে। অমিত শাহ এবার রাজ্যে শান্তিপূর্ণ ভোট করানোর জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান। পিলু বলেন, মানুষ যদি বুথে গিয়ে ভোট না দেয় তাহলে পরিবর্তন হবে না। বুথে গেলে বুথের ভিতর যে ভূত গুলো আছে তারা আর থাকবে না। তবেই পরিবর্তন সম্ভব। TMC ছেড়ে অনেকেই BJP-তে যোগদান করছেন। তাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ রয়েছে। সেই প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ হয়তো এটা ভালোভাবে নেয় না। তবে বিজেপিকে সেটা নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। যদি তারা এই কার্যকলাপ সংশোধন করে নেয়। তৃণমূলের যোগ্যতর নেতাদের বিজেপি দায়িত্ব দিচ্ছে এবং তারা গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে। তবে এগিয়ে যেতে গেলে এই পরিস্থিতি মেনে নিতে হবে বলে মত তার। কারণ তা না হলে BJP আজকে যেভাবে শক্তি সঞ্চয় করতে পেরেছে সেটা সম্ভব হতো না। এক প্রশ্নের উত্তরে পিলু বলেন, মানুষ যখন দেখবে যারা জিনা হারাম করে দিয়েছে বিভিন্ন দুর্নীতি করেছে তারাই আবার ক্ষমতায় আসার জন্য বলছে তখন মানুষ ঠিক জায়গায় গিয়ে ভোট দেবে। নরেন্দ্র মোদির মতো দুর্নীতি বিহীন একটি সরকার রাজ্যে যাতে হয় সেই চেষ্টায় তারাও থাকবে। নরেন্দ্র মোদির টিম যেভাবে কাজ করছে তাতে সঠিক ভাবে সবকিছু পরিচালনা হচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে তিনি বলেন, আয়ুষ্মান প্রকল্প যদি রাজ‍্যে চালু হতো তাহলে মানুষ সুবিধা পেত। কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প রাজ্যে চালু হচ্ছে না বলে তারা বঞ্চিত হচ্ছেন। এরপরে সিঙ্গুরের শিল্প না হওয়া, রাজ্যে মানুষের কর্মসংস্থান তৈরি না হওয়ার প্রসঙ্গে অভিযোগ করেন পিলু ভট্টাচার্য। ভাষা সন্ত্রাস নিয়ে প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সামাজিক পরিবেশে ভাষার দৈনতা দেখা যাচ্ছে। TMC যে রকম বলছে BJP-র নেতৃত্ব এর মধ্যেও সেই ধরনের ভাষা শোনা যাচ্ছে। একজন জনপ্রতিনিধির মার্জিত ভাষা প্রয়োগ করা উচিত। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা নেত্রীদের ব্যাংক একাউন্ট দেখা উচিত। ক্ষমতায় আসার আগে তাদের কি ছিল তারপর এখন তার আর্থিক বৃদ্ধি কি হয়েছে। সেটা দেখলে পরিস্থিতিটা বোঝা যাবে। ওই টাকা থাকলে রাজ্যের আরো অন্যান্য উন্নয়ন করা সম্ভব হতো বলে মনে করেন পিলু ভট্টাচার্যে। নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর জন্ম জয়ন্তী অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের বক্তৃতা দেওয়া উচিত ছিল। তা না করে সেদিন যে পরিস্থিতি হয়েছে তাতে একটা সাংবিধানিক খারাপ পরিস্থিতি হয়েছে বলে মনে হয়। বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যের ফলাফল প্রসঙ্গে বলেন, অমিত শাহজি বলেছেন আব কি বার 200 পার। মানুষ ভোট দেবে হ্যাঁ তৃণমূল না তৃণমূলের নিরিখে। ফলে বিজেপির 200 আসনে জয়লাভ করা খুব কঠিন নাও হতে পারে বলে Campaign Calling Media-কে জানালেন বিশিষ্ট সঙ্গীতশিল্পী পিলু ভট্টাচার্য।