নিজস্ব সংবাদদাতা: রাজ্য বিধান পরিষদ গঠনের জন্য বিধানসভায় বুধবার প্রস্তাব পাশ হয়ে গেল। ভোটাভুটির মাধ্যমেই এই প্রস্তাব পাশ হয়। তবে বিধানসভায় প্রস্তাব পাশ হলেও বিধান পরিষদ গঠনের জন্য রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সিলমোহর দরকার। সেখান থেকে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রক ঘুরে লোকসভা ও রাজ্যসভা অর্থাৎ সংসদের দুই কক্ষে প্রস্তাবটি পাশ করাতে হবে। এরপর চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য রাষ্ট্রপতি স্বাক্ষর লাগবে। তবেই রাজ্যে বিধান পরিষদ চালু হবে।
উত্তরপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, বিহার, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, জম্মু-কাশ্মীরের বিধানসভা দ্বিকক্ষবিশিষ্ট। ১৯৫২ সালের ৫ জুন ৫১ সদস্যকে নিয়ে বাংলায় বিধান পরিষদ গঠিত হয়। ১৯৬৯ সালের ২১ শে মার্চ তার অবলুপ্তি ঘটে।
এরপর ২০১১ সালে তৃণমূল সরকার গঠনের পরই এডহক কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে এই প্রস্তাব পেশ করা হয়। কিন্তু সেই সময় এই আলোচনা এগোয়নি। রাজ্য সরকারের যুক্তি ছিল বিপুল ঋণের বোঝা নিয়ে সরকার ক্ষমতায় এসেছে তাই এই মুহূর্তে বিধান পরিষদ গঠন করা সম্ভব নয়। তবে মাঝে পেরিয়েছে ১০ বছরের শাসন ব্যবস্থা। তাই এবার শাসক দল তৃণমূলই এই বিধান পরিষদ গঠনের পক্ষে।
এদিন বিধান পরিষদ গঠন নিয়ে ভোটাভুটি হয় বিধানসভায়। প্রস্তাবের পক্ষে ভোট পড়ে ১৯৬টি। বিপক্ষে ভোট দেন ৬৯ জন বিধায়ক। বিধানসভায় উপস্থিত ছিলেন মোট ২৬৫ জন বিধায়ক।
বিধান পরিষদ নিয়ে আপত্তি তুলেছে বিজেপি। শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শংকর ঘোষ বলেছেন, “বিধায়কদের উপর কি ভরসা নেই? একে কোটি কোটি টাকার দেনা, তার ওপর কোভিডের প্রকোপ, সেই সময় বিধান পরিষদ গঠন করে বাড়তি খরচের কি প্রয়োজন?” বিধান পরিষদ গঠন করতে ‘প্রায় ১০০ কোটি টাকা খরচ’ হবে বলেও যুক্তি দেন কোচবিহার দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক মিহির গোস্বামী।
বিজেপি বিধায়কের সঙ্গে একমত সংযুক্ত মোর্চার সমর্থিত ইন্ডিয়ান সেকুলার ফ্রন্টের বিধায়ক নওশাদ সিদ্দিকি। তিনি বলেন, “বিধান পরিষদ গঠন আর সাদা হাতি পোষা সমান”।
অন্যদিকে, অবশ্য পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, “একসময় যারা সরকার পক্ষে ছিলেন তারাই ২০১১ সালে বিধান পরিষদের পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। আজ বিরোধী আসনে বসে এর বিরোধিতা কেন? বাংলার স্বার্থেই প্রস্তাবকে সমর্থন করা হোক”।