রাজ্যে বিধানসভা নির্বাচনের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন রাজ্যের ক্ষমতায় ফিরলে বিধান পরিষদ গঠন করবেন। যাদের বিধানসভা নির্বাচনে টিকিট দেওয়া যায়নি তাদের বিধান পরিষদের সদস্য করা হবে। তার সেই প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে চলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধান পরিষদ তৈরীর প্রক্রিয়া শুরু করেছেন তিনি। দেশে সংসদে যেরকম দুটি কক্ষ থাকে লোকসভা এবং রাজ্যসভা। ঠিক তেমনি রাজ্যের আইনসভা সংবিধানে দুই কক্ষের নিয়ম আছে আইনসভার নিম্ন কক্ষ বিধান সভা আর উচ্চ কক্ষ বিধান পরিষদ হিসেবে পরিচিত। তবে বিধান পরিষদ রাজ্য সরকার গুলি চাইলে অবলুপ্ত করতে পারে। আবার তৈরি করতে পারে। সে ক্ষেত্রে সংবিধান সংশোধন জরুরি। এই মুহূর্তে দেশের ছয়টি রাজ্যে বিধান পরিষদ রয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ কর্ণাটক মহারাষ্ট্র উত্তর প্রদেশ বিহার এবং তেলেঙ্গানা। বাংলাতে 1952 সাল থেকে 1969 সাল পর্যন্ত বিধান পরিষদ ছিল। 1969 সালে বাংলা কংগ্রেস এবং যুক্তফ্রন্ট সরকার সেটা বাতিল করে দেয়। রাজ্যের বিধানসভার এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত বিধান পরিষদের সদস্য হয়। তবে চল্লিশের নিচে কোন ভাবেই নয়। বাংলার ক্ষেত্রে সেটা 40 থেকে 91 পর্যন্ত হতে পারে। বিধান পরিষদের সদস্যদের মেয়াদ ছয় বছর। প্রতি দুই বছর পর এক তৃতীয়াংশ সদস্য অবসর নেবেন। এক্ষেত্রে রাজ্যের বিধায়করা এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নির্বাচন করেন। পঞ্চায়েত পুরসভা পুরনিগমের মত স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থার মাধ্যমে এক-তৃতীয়াংশ সদস্য নির্বাচন করা হয়। স্নাতকদের ভোটের মাধ্যমে এক ষষ্ঠাংশ সদস্য নির্বাচিত হন। স্নাতক হওয়ার পাশাপাশি রাজ্যে তিন বছরের বেশি ভোটারদের বসবাস করতে হয়। শিক্ষকদের ভোটে বাকি 1 ষষ্ঠাংশ নির্বাচিত হবেন। শিক্ষকের পাশাপাশি ওই রাজ্যে তিন বছরের বেশি বসবাস করতে হয়। বিধান পরিষদের চেয়ারম্যান এবং ডেপুটি চেয়ারম্যান ক্যাবিনেট মন্ত্রীর মর্যাদা পান। রাজ্য মন্ত্রিসভায় বিধান পরিষদ তৈরির প্রস্তাব পাস হয়ে গিয়েছে। বিধানসভার উচ্চকক্ষ তৈরীর ক্ষেত্রে রাজ্য সরকার একধাপ এগিয়েছে। বিধান পরিষদ তৈরির প্রস্তাব পাশ হলে সেটা রাজ্যপালের কাছে যাবে। রাজ্যপালের অনুমোদন পেলে সংসদ ভবনের প্রস্তাব পাঠানো হবে। কোনো রাজ্যে বিধান পরিষদ গঠন করতে হলে সংবিধান সংশোধন করতে হয়। সংসদে প্রস্তাব পাস হলে রাষ্ট্রপতির সম্মতি লাগবে। বিধান পরিষদের কাজ অনেকটা রাজ্যসভার মত। তবে কোনো সরকার গঠন বা ভেঙে দেওয়ার বিধান পরিষদ ভূমিকা নিতে পারেনা।