Rajib Ghosh– মমতা চোরেদের মাথায়। এরা সবাই হাত। এরা বিজেপিতে যোগদান করে তৃণমূলের বলার সুবিধা হয়ে গেছে। আজকে শুভেন্দু থেকে শুরু করে অন্যান্যরাও অভিযোগ করছে কিংবা দুর্নীতি নিয়ে এরাও তো Part of দুর্নীতি, Part of রিগিং। আজ বললে হবে না।Campagn Calling Media-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এই কথা জানালেন প্রখ্যাত আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ। তিনি এদিন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রসঙ্গে তাকে আক্রমণ করেন। তিনি বলেন, ভিআইপি রোডের নিচে যে সমস্ত জলাভূমি রয়েছে সে সমস্ত ভরাট করা হয়েছে। তখন রাজীব সেচমন্ত্রী ছিলেন। সুজিত আর রাজীব মিলে এই সমস্ত জলা জমি ভরাট করেছে। ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ মানেনি। বিজেপি এদের নিয়ে ভুল করছে। যদিও বিজেপি তাদের নিশ্চয়ই কোনো পরিকল্পনা রয়েছে। তৃণমূলের সাংগঠনিক সমন্বয়হীনতার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ওই দলে একটাই পোস্ট আর সকলেই ল্যাম্পপোস্ট। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সুবিধে হচ্ছে তার দলের মধ্যে সমন্বয়হীনতা সেটাই। বন সহায়ক পদে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এর বিরুদ্ধে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দুর্নীতির অভিযোগ প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, দুর্নীতির মাথায় মমতা ব্যানার্জি। তবে রাজীব ব্যানার্জি দায় এড়াতে পারে না। এক সময় এই এলাকায় মুকুল সব্যসাচী টাকা তুলত। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়ে ছিলাম। বিজেপির সাংগঠনিক অবস্থা কিরকম। কৈলাস বিজয়বর্গীয় বহিরাগত। যদিও প্রশান্ত কিশোর বাইরের হলেও তাকে সেই অর্থে ধরা হচ্ছে না। কারণ সে স্ট্র্যাটেজিস্ট। তৃণমূলের অন্দরে বহু দুর্নীতি রয়েছে বলে মন্তব্য তার। কয়লা পাচারের তদন্ত সিবিআই করতে পারে না বলে আদালত মন্তব্য করেছে বলে জানান অরুণাভ। তবে এই বিষয় নিয়ে ফের শুনানি হতে পারে। আগের নির্বাচনে তৃণমূল টাকা ছড়িয়ে দুর্নীতি করেই জয়লাভ করেছে বলে জানান তিনি। তাঁর কথায়, মমতার পরে যদি কেউ মন্ত্রিত্ব সেই অর্থ ভোগ করে থাকে তাহলে সেটাই করেছে শুভেন্দু অধিকারী। তিনটি দপ্তরের মন্ত্রী, বাড়ির প্রত্যেকেই প্রায় সাংসদ, চেয়ারম্যান, বিভিন্ন পদাধিকারী। জঙ্গলমহলে শুভেন্দুরাই মমতার হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছে। স্বৈরাচারী বিষয়টা তারাই করেছে। মমতার পরিবার নিয়ে বললে শুধু হবেনা। শুভেন্দুর পরিবার যথেষ্ট ক্ষমতা ভোগ করেছে। এর পরেই অরুণাভ বলেন, বিজেপি যেখানে সাফল্য পাচ্ছে অনৈতিকতার উপর দাঁড়িয়ে। এখানে ক্ষমতায় আসলে হয়তো দিলীপ ঘোষ মুখ্যমন্ত্রী হবেন। কিন্তু তাতে কি। এরপরে জয় শ্রীরাম ধ্বনি প্রসঙ্গে বলেন, আমি বলি থ্রি এক্স রাম। আগে জয় শ্রীরাম পলিটিক্যাল ছিল না। মমতা সুবিধাবাদী। যার উপর নির্ভর করে উঠবে তাকেই লাথি মারবে। ভিক্টোরিয়ার ঘটনায় মমতা অ্যাডভান্টেজ পেয়ে গেল। নেতাজি সম্বন্ধে কিবা বলত। কিন্তু ওই ব্যবহার করে অন্য একটা পরিবেশ তৈরি করতে পারল। মমতা মাটির গন্ধটা ঠিক বোঝে। বিজেপি এটাকে ব্যবহার করছে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে। যার যেখানে ভক্তি আছে ঠিক আছে। স্বাস্থ্য সাথী কার্ড প্রসঙ্গে অরুণাভ বলেন, পলিটিশিয়ানরা এই ধরনের কথা বলেন। ইলেকশনের জন্য এই মিথ্যে কথা বলা হচ্ছে। মোদি ওই ধরনের কথা বলেছে। রাজনীতির মধ্যে এথিক্স আর নেই। বিধানচন্দ্র রায়, জ্যোতি বসু, বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের পর হঠাৎ দেখলাম মমতা। এখন তো আবার শুনছি শুভেন্দুর নাম আসছে। তিনি মুখ্যমন্ত্রীর পদের অবনমন প্রসঙ্গে এই ভাবেই মন্তব্য করেন। সামনের নির্বাচন প্রসঙ্গে তার মন্তব্য, মমতার প্রতি ঘৃণায় লোকসভায় মানুষ ভোট দিয়েছে। 18 টি আসন পেয়েছে বিজেপি। তবে বিধানসভা নির্বাচনে এই ধরনের ভোটে কিন্তু ভাগ বসবে এবং সেটার ফল কিছুটা হলেও প্রভাব ফেলবে বিজেপির উপরে। এবার নির্বাচনে বুথের সংখ্যা বাড়বে। সেখানে বিজেপি সমস্ত বুথে তাদের কর্মীদের দায়িত্ব দিতে পারবে না। কারণ সেই পরিমাণে কর্মী নেই বলে জানান অরুণাভ। তবে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেন যদি এবারের বিধানসভা নির্বাচনে সমস্ত বুথে বিরোধীরা যদি দাঁড়াতে না পারে তাহলে বেশ কিছু বুথে ছাপ্পা ভোট হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বাঙালি ও অবাঙালিদের মধ্যে বিভাজনের পরিস্থিতি দেখা যাচ্ছে। সংখ্যালঘু ভোটের একটা বড় অংশ মমতার পক্ষে থাকছে। এবার বাম এবং কংগ্রেসের জোট কিন্তু প্রচার কর্মসূচী করছে। সংবাদ মাধ্যম হয়তো সেটার প্রচার করছে না। কিন্তু মানুষ সিপিএমের সভায় আসছে। ফলে সেই দিক থেকে ফলাফল কিন্তু এবার যথেষ্ট অন্যরকম হলেও হতে পারে বলে মন্তব্য অরুনাভর। Campaign Calling- এর প্রশ্নের উত্তরে অরুনাভ বাম কংগ্রেসের জোট এর সাফল্যের কথা বলেন। তার বক্তব্যের স্বপক্ষে ভোটের শতাংশ হার তুলে ধরেন। বিজেপির মধ্যে তৃণমূল থেকে আসা দলীয় নেতারা সামনের সারিতে চলে আসছেন বলে পুরনো কর্মীদের অসন্তোষ তৈরি হচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। অরুণাভ বলেন, কৃষি আইন নিয়ে আলোচনা করা উচিত ছিল। সেটা না করাই যথেষ্ট সমস্যা তৈরি হয়েছে। এর পরে তিনি শুভেন্দু অধিকারী দের পরিবার যে ক্ষমতা ভোগ করছে সেই বিষয়ে বিস্তারিত বলেন। কয়েক হাজার টাকা পৌঁছে দিলেই জনগণ ভোট দেবে বলে মন্তব্য তার। পাশাপাশি তিনি 2021 এর বিধানসভা নির্বাচনে ত্রিশঙ্কু বিধানসভা গঠন হতে পারে বলে জানান। দীর্ঘদিন পর শোভন এবং বৈশাখী বিজেপির হয়ে কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করছেন এবং বিভিন্ন জায়গায় সভা করছেন। এই প্রসঙ্গে অরুণাভ বলেন, এটা একটা Great Entertainment ওদের দায়িত্ব দেওয়ায় বিজেপির ক্ষতি হচ্ছে। শোভন বৈশাখীর প্রসঙ্গ তিনি হাসির খোরাক বলে মন্তব্য করেন। শোভন নিজের কেন্দ্রে কখনোই জয়লাভ করতে পারবে না বলে জানিয়ে দিলেন প্রখ্যাত আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ।